ইসরায়েলের সেনাবাহিনী কত শক্তিশালী, সামরিক খরচের কত ভাগ পায়

প্রকাশিত: ৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০২৩

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী কত শক্তিশালী, সামরিক খরচের কত ভাগ পায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ভয়াবহ হামলার জেরে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পঞ্চম দিনের মতো বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। শনিবার শুরু হওয়া এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহত হয়েছে ১২ শো`র বেশি মানুষ। পঞ্চমদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনে বিমান হামলায় নিহত হয়েছে ২৬০ শিশুসহ কমপক্ষে ৯৫০ বাসিন্দা। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শিগগিরই ইসরায়েল সফর করবেন। হামাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক হামলায় পূর্ণ সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিতে তেলআবিব যাচ্ছেন তিনি। দূরনিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র এবং অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানও থাকছে এই সহায়তায়।

এর আগে, রোববার মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লর্ড অস্টিন ঘোষণা দেন, ওয়াশিংটন মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সবচেয়ে বড় মিত্র ইসরায়েলের জন্যে বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজসহ তাদের সবচেয়ে বেশি যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড ইতোমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছে।

 

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম প্রতিশ্রুতি হচ্ছে ওই অঞ্চলে ইসরায়েলের সামরিক শক্তির প্রভাব বজায় রাখা। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সহায়তা এবং তেল আবিবের নিত্য নতুন অস্ত্রের সমৃদ্ধি মধ্যপ্রাচ্যে তেল আবিবের সামরিক শক্তির আধিপত্যকে স্থায়ী করেছে।

এক নজরে ইসরায়েলের সামরিক শক্তি

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (আইআইএসএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে তিন বাহিনীতে ইসরায়েলের সক্রিয় সেনার সংখ্যা এক লাখ ৬৯ হাজার ৫০০। তাদের রিজার্ভ ফোর্সের সংখ্যা চার লাখ ৬৫ হাজার।তাদের আধাসামরিক বাহিনীর সংখ্যা আট হাজার।

বুধবার দেশটির সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজায় স্থল অভিযান চালানোর জন্যে সেখানে জড়ো করা হয়েছে তিন লাখ সেনাকে।

 

ইসরায়েলের অত্যাধুনিক ১৯৬টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানসহ মোট যুদ্ধবিমানের সংখ্যা ৩৩৯টি। তাদের ৫টি ডুবোজাহাজ এবং ৪৯টি পেট্রোল ও কোস্টাল যুদ্ধযান রয়েছে।

তাদের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম সিস্টেম রয়েছে যা দিয়ে যেকোন ধরনের স্বল্প পাল্লার রকেট ধ্বংস করা যায়। ২০০৬ সালের সেই সিস্টেমকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরও বেশি আধুনিক করা হয় ২০১১ সালে। এর পাশাপাশি, ২০২২ সালে ১৫০ কোটি ডলার খরচে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ সিস্টেম সরবরাহ করে।

আইআইএসএস ধারনা করে ইসরায়েলের পারমাণবিক বোমা রয়েছে। তাদের জেরিকো ক্ষেপণাস্ত্র এবং পরমাণু বোমাবাহী যুদ্ধবিমানও রয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক খরচ
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইসরায়েলের সামরিক ব্যয় হয়েছিল দুই হাজার ৩৪০ কোটি ডলার। মাথাপিছু খরচের হিসেবে ইসরায়েলের সামরিক ব্যয় বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম অবস্থানে রয়েছে কাতার। গত বছর দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) সাড়ে চার শতাংশ খরচ করা হয় সামরিক খাতে। শতাংশের হিসাবে এটি বিশ্বের প্রথম ১০টি দেশের একটি।

 

স্টকহোমের সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল সামরিক অস্ত্র আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি করে। তবে গত দশকে রপ্তানির পরিমাণ কমেছে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ৩৫টি দেশ ৩০৩ কোটি ডলারের অস্ত্র আমদানি করেছে ইসরায়েল থেকে।

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর দুই দেশের সম্পর্ক দৃঢ় হয় এবং ইসরায়েলের অস্ত্র বেচে যে আয় হয় তার প্রায় ৩৩ শতাংশ এককভাবে আসে ভারত থেকে।

কী পরিমাণ সামরিক অর্থ সহায়তা পায় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র থেকে

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী যে সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পায় ইসরায়েল। ১৯৪৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইসরায়েল ওয়াশিংটন থেকে এককভাবে পেয়েছে ২৬ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মিশরের চেয়ে ইসরায়েলের অর্থ গ্রহণের মাত্রা প্রায় দ্বিগুণ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক সহায়তা নেয়া দেশগুলোর তালিকার শীর্ষ ইসরায়েল। এর পরে মিশর। আফগানিস্তান, ভিয়েতনাম, ইরাক, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, ভারত, তুরস্ক এবং ফ্রান্স রয়েছে যথাক্রমে এই তালিকায়

R/N

আমাদের তথ্যচিত্র গান কবিতা নাটক ভালো লাগলে ফেসবুকে শেয়ার করুন।
0Shares