গাজা সংঘাতে যেভাবে দুপক্ষই মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধে জড়িয়েছে প্রমাণ দিলেন আইসিসির সাবেক প্রধান

প্রকাশিত: ৪:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২৩

গাজা সংঘাতে যেভাবে দুপক্ষই মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধে জড়িয়েছে প্রমাণ দিলেন আইসিসির সাবেক প্রধান

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের মূলভূখণ্ডে গাজার শাসকগোষ্ঠী সশস্ত্র হামাস সদস্যদের হামলা স্পষ্টতই গণহত্যার শামিল কারণ তারা পরিকল্পিতভাবে ইসরায়েলিদের নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। হত্যার উদ্দেশ্যে কোন বেসামরিক নাগরিকদের উপর এমন ভয়াবহ হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধও। সেই সঙ্গে ইসরায়েল থেকে বেসামরিক ব্যক্তিদের ধরে গাজায় জিম্মি করা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধ। হামাসের হামলার জেরে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বাত্মক অবরোধের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বাত্মক অবরোধ, বেসামরিক ব্যক্তিদের খাবার-পানি বন্ধ করে দেয়া, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করাও মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা এবং আংশিক যুদ্ধাপরাধের শামিল। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক প্রধান প্রসিকিউটর লুইস মোরেনো-ওকাম্পো এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন।

আর্জেন্টিনার এই আইনজীবী আইসিসির প্রথম প্রসিকিউটর ছিলেন। ২০০৩ সালের জুন থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ৭১ বছর বয়সী এই আইনজীবী বলেন, ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ হত্যা করে এবং দুই শতাধিক ব্যক্তিকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রাখে। এই হামলার জেরে ৭ অক্টোবর থেকে গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। প্রায় তিন সপ্তাহ ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় ৬ হাজার ৭৭৫ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের তিন ভাগের দুই ভাগ নারী ও শিশু। সাত শতাধিক শিশুসহ নিখোঁজ দেড় হাজারের বেশি। নির্বিচারে চালানো এই হামলায় আহত হয়েছেন সাড়ে আরও ১৭ হাজার মানুষ।

সেই সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বাত্মক অবরোধে গাজায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সেখানে ২২ লাখের বেশি বাসিন্দার মাঝে খাবার ও পানির তীব্র হাহাকার দেখা গেছে। গাজার বাসিন্দাদের অনেকের দিন কাটছে অনাহার-অর্ধাহারে। জ্বালানি, ওষুধ ও চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসংকটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গাজার হাসপাতালগুলো। এতে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ গতকাল বুধবার জানিয়েছে, গাজার ৩৫টি হাসপাতালের ১২টিতে এখন সেবাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রসিকিউটর ওকাম্পো বলেন, ‘৭ অক্টোবর হামাসের হামলা স্পষ্টতই মানবতাবিরোধী অপরাধ…কারণ, একটি (ইসরায়েলি) জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করার উদ্দেশ্য নিয়ে ভয়াবহ হামলা যা গণহত্যার শামিল।
ইসরায়েল থেকে বেসামরিক মানুষকে ধরে গাজায় জিম্মি করা যুদ্ধাপরাধের সমান। কারণ, জিম্মি করা যুদ্ধাপরাধ।’

সশস্ত্র হামাসের হামলার জেরে গাজায় ইসরায়েলি সর্বাত্মক অবরোধ নিয়েও কথা বলেন ওকাম্পো। হামাসের হামলা পরবর্তী গাজায় বেসামরিক মানুষকে ইসরায়েলি অবরোধকে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা এবং আংশিক যুদ্ধাপরাধ বলে উল্লেখ করেন ওকাম্পো।

R/N

আমাদের তথ্যচিত্র গান কবিতা নাটক ভালো লাগলে ফেসবুকে শেয়ার করুন।
0Shares