সিলেট ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৩১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪
অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের জন্য পাকিস্তানের কূটনীতিকেরা দেশটির সরকারের জন্য একটি কৌশলপত্র তৈরি করেছেন। ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক হাইকমিশনারসহ কূটনীতিকেরা এই কৌশলপত্র তৈরির সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালাই করতে তাঁরা একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছেন।
এই উদ্যোগের সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে আজ সোমবার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
সূত্রগুলো গতকাল রোববার এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সম্প্রতি ঢাকায় সাম্প্রতিক পট পরিবর্তন এবং পাকিস্তানের কৌশল নির্ধারণে পরামর্শের জন্য বাংলাদেশে পাকিস্তানের সাবেক হাইকমিশনার এবং অন্য অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় কোনো সূত্রই পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি। একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত হাইকমিশনারদের কাছ থেকে মতামত ও পরামর্শ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী এই বৈঠক ডেকেছিলেন।
ছাত্র–জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। এর মাধ্যমে তাঁর ১৫ বছরের শাসনের সমাপ্তি ঘটে। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নতুনভাবে পর্যালোচনার সুযোগ দেখছে ইসলামাবাদ।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে পাকিস্তান–বাংলাদেশ সম্পর্ক বেশ তিক্ত ছিল। শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তিনি প্রায়ই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে নয়াদিল্লির পরামর্শ নিতেন। ইসলামাবাদ ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু হাসিনা সেই প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ভারতের জন্য গুরুতর ধাক্কা। আর এটিকেই পাকিস্তানের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের সুযোগ হিসেবে দেখছে ইসলামাবাদ। এই উত্তরণের প্রেক্ষাপটে অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিকেরা পাকিস্তান সরকারকে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কাছে হস্তান্তর করা একটি কৌশলপত্র মূলত পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্কের একটি রোডম্যাপ। অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিকেরা বিশ্বাস করেন, পাকিস্তানের অবশ্যই এই সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। তবে এগোতে হবে সতর্কতা এবং কৌশলী কূটনীতির সঙ্গে।
কোনো পক্ষ না নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার দিকে মনোনিবেশ করে পাকিস্তান সরকারকে সংযত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন কূটনীতিকেরা। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দেয় এমন কোনো প্রকাশ্য পদক্ষেপে লিপ্ত না হওয়ার জন্যও সরকারকে সতর্ক করেছেন তাঁরা।
অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিকেরা প্রস্তাব করেছেন, পাকিস্তানকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ভারতের দৃষ্টিতে দেখলে হবে না। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের ধরন যা–ই হোক না কেন, পাকিস্তানকে অবশ্যই তার নিজস্ব পথ অনুসরণ করতে হবে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৪ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। তাদের মধ্যে আপাত বৈরিতা সত্ত্বেও উভয় দেশের মধ্যে কিছু সম্পর্ক রাখতেই হবে।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে একজন অবসরপ্রাপ্ত আমলার বক্তব্যও যুক্ত করা হয়েছে। ওই আমলা পরামর্শ দিয়েছেন, সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে পাকিস্তান হয় বাংলাদেশে একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করতে পারে, অথবা বাংলাভাষী কাউকে হাইকমিশনার দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘অনেক দক্ষ অবসরপ্রাপ্ত ফরেন সার্ভিস অফিসার আছেন যারা বাংলাভাষী। পাকিস্তান যদি ৭৮ বছর বয়সী মুনির আকরামকে জাতিসংঘে দূত রাখতে পারে, তাহলে আমরা কেন ঢাকায় একজন অভিজ্ঞ কূটনীতিক নিয়োগ করতে পারব না?’
ধারণা করা হয়, শেখ হাসিনার মেয়াদে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতির কারণে, পাকিস্তান ঢাকার হাইকমিশনে উপযুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ বন্ধ করে দেয়। ওই আমলা বলেন, ‘এটা পরিবর্তন করা উচিত। আমাদের অবশ্যই ঢাকাকে “এ” স্টেশন হিসেবে বিবেচনা করতে হবে, যার অর্থ হাইকমিশনারের পদটি অবশ্যই একজন যোগ্য কূটনীতিককেই দিতে হবে।’
শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে পাকিস্তান। গত শুক্রবার বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। বহু বছরের মধ্যে দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে এটিই প্রথম যোগাযোগ। সাম্প্রতিক ওআইসি সম্মেলনের ফাঁকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবেরা বৈঠক করেছিলেন।
Administrative Contact:
Name: Fatama Akter Shiuly
Address: Sheikhghat Sylhet.
Postal Code: 3100
Email: siuliakter571@gmail.com
Phone: 880 1760275449
প্রধান সম্পাদক: ফাতেমা আক্তার শিউলী
প্রধান সম্পাদক: ফাতেমা আক্তার শিউলী Phone: 880 1760275449