২৮ বছরে ঢাকায় জলাধার কমেছে ৭৩.৭১ শতাংশ

প্রকাশিত: ১:০৭ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩

২৮ বছরে ঢাকায় জলাধার কমেছে ৭৩.৭১ শতাংশ

অনলাইন ডেস্ক:

অপরিকল্পিত নগরায়ণে প্রতিনিয়ত কমছে ঢাকার জলাধার। গত ২৮ বছরে ঢাকার জলাধার ও জলাভূমি কমেছে ৭৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। ১৯৯৫ সালে যেখানে জলাধার ছিল ৩০ দশমিক ৯৮ শতাংশ, সেখানে ২০২৩ সালে জলাধার কমে হয়েছে ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল‍্যানার্সের (বিআইপি) গবেষণায় এ তথ্য ওঠে এসেছে।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটর বিআইপি কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত ‘ড‍্যাপ বাস্তবায়নের প্রতিবন্ধকতা: বিএডিসিসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক জলাভূমি ভরাট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ৩০৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকার ভূমির ব্যবহার তুলে ধরা হয়।

বিআইপির তথ্যমতে, ১৯৯৫ সালে ঢাকায় অবকাঠামো বা নির্মিত এলাকার পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ, সেখানে ২০২৩ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘প্রতিনিয়ত যে জলাধার ভরাট হচ্ছে, এর জন্য আমরা সব সময় বেসরকারি আবাসিক কোম্পানিগুলোকে দায়ী করি। এর পেছনে যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরও দায় আছে, সেটা অনেকটা উপেক্ষিত। সরকার জলাধার সংরক্ষণে আইন করেছে, কিন্তু সেটা বাস্তবায়নে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখছে না। রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত, উজাড় হওয়া জলাধারগুলোকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেওয়া।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, ‘ঢাকা বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। এখানে মানুষের নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তারা সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার হারাচ্ছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কর্মকাণ্ডগুলোর কারণে।’

সুলতানা কামাল আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে আইনের শাসন এতই দুর্বল, কেউ আইন মানার কথা চিন্তাই করে না। পরামর্শ দিলে সরকার যে শুনবে, সে বিশ্বাস এখন আর নেই। এখন আমাদের প্রতিবাদ জানানো উচিত, এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবির) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বিএডিসি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সংস্থাটি ড্যাপের চিহ্নিত জলাধার ভরাট করছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আছে রাজউকের। একই সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে পারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এই দুই সংস্থা এখনও বিএডিসিকে আইনগতভাবে চ্যালেঞ্জ করতে পারেনি। সেটা না করলে আমরা বুঝবো রাজউক ও ডিএনসিসি অনিয়মের অংশীদার হয়েছে।’

বিআইপির সভাপতি ফজলে রেজা সুমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি নূর মোহাম্মদ খান, নগর গবেষণা কেন্দ্রের সহসভাপতি ড. গোলাম মর্তুজা প্রমুখ।

আমাদের তথ্যচিত্র গান কবিতা নাটক ভালো লাগলে ফেসবুকে শেয়ার করুন।