যেসব কাজ করতে পারেন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপিরা

প্রকাশিত: ৭:৪৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪

যেসব কাজ করতে পারেন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপিরা

 

জাতীয় ডেস্ক:

সংসদে আইনপ্রণেতা হিসেবে একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্যের মতো সমান অধিকার থাকে একজন সংরক্ষিত আসনের সদস্যের। একজন সংরক্ষিত আসনের সদস্যকে সর্বোচ্চ দুটি জেলার দায়িত্ব দেয়া হয়। কাউকে কাউকে একটি জেলারও দায়িত্ব দেয়া হয়। একটি নির্বাচনী আসনে জনগণের ভোটে বিজয়ী সদস্যদের পাশাপাশি ওই এলাকার জন্য নির্ধারিত সংরক্ষিত আসনের সদস্যরা এলাকার বিভিন্ন ইস্যু সংসদে উপস্থাপন করার অধিকার রাখেন।

সংসদে এবারে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংরক্ষিত আসনের এমপি প্রার্থী সানজিদা খানম বলেন, ‘সাধারণ মানুষেরা মনে করে মহিলা এমপিদের কাজ নাই। তাদের কাজ আছে, নাই যে এমন না। তবে উন্নয়ন কাজে সংরক্ষিত এমপিদের অংশগ্রহণ সাধারণ আসনের কাছাকাছি বাড়ানো প্রয়োজন’।

সাবিনা আক্তার তুহিন একাদশ সংসদে সংরক্ষিত আসনের এমপি ছিলেন। এবার তিনি সাধারণ আসনে মনোনয়ন নিয়েছিলেন স্বতন্ত্রভাবে। কিন্তু জিততে পারেননি। তবে এবার সাবিনা আক্তার তুহিন আর সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন পাননি।

সাবিনা আক্তার তুহিন বলেন, ‘হয়তো আমরা সাধারণ এমপিদের মতো বরাদ্দ পাই না। তবে আমরা এলাকার জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতামত দিতে পারি সংসদে। বিভিন্ন দুর্ভোগ দুর্গতি নিয়ে কথা বলতে পারি। সংরক্ষিত আসনের এমপিরা মন্ত্রীর সাথে কথা বলে বরাদ্দ আনতে পারে।’

তবে তাদের আইন প্রণয়ন ছাড়া তাদের কাজের পরিধি যে খুব বেশি, সেটি মনে করছেন না রাজনৈতিক ও নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, সংসদ সদস্যরা আইন প্রণয়ন আর সংসদে কথা বলা ছাড়া খুব বেশি ভুমিকা রাখতে পারেন না। সুতারং যদি কেউ বলে উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে পারে সেটি খুব একটা সঠিক বলে মনে হয় না।

স্থানীয় সরকার বিশ্লেষক তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা মূলত আইন বিভাগের লোক। দৃশত এলাকায় তাদের কোন কাজ নেই। তারা যা দেখবে সেটা সরকারের কাছে, সংসদের কাছে বলবে। তারা শুধু ডিও লেটার দিতে পারবে কিংবা সংসদে মন্ত্রীকে বলতে পারে।’

সংরক্ষিত আসনের নারী এমপিদের ক্ষমতা
নারীর ক্ষমতায়নে সংরক্ষিত যে ৫০টি আসন রয়েছে নিয়ম থাকলেও সেখানে কখনোই নির্বাচন হয় না দলীয় সমঝোতার কারণে। সুতরাং দলীয় মনোনয়ন পেয়েই যে কেউ হয়ে যান পাঁচ বছরের জন্য এমপি। তারা নিজেরা কিংবা নারী সমাজকে কতটুকু ক্ষমতায়িত করতে পারেন, সেটা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন সময়।

সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপিদের কেউ কেউ বলছেন, সাধারণ আসনে নারীদের দলীয় মনোনয়ন বাড়ানো হলে সংরক্ষিত আসনের প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে। নারী আসনের সাবেক এমপি সাবিনা আক্তার তুহিন বলেন, ‘সাধারণ আসনে একজন নারীকে প্রতীক দিয়ে ভোট করতে দিলে নারী অনেক দূরে এগিয়ে যেতে পারে। এখন যদি এটা ৫০ শতাংশ না করা যায় অন্তত ৩০ শতাংশ সাধারণ আসনে মনোনয়ন দেয়া উচিত। তাহলে আর সংরক্ষিত আসনের প্রয়োজন পড়বে না।

এমন অবস্থায় দুটি ভিন্ন বক্তব্য উঠে এসেছে বিশ্লেষকদের কথা বার্তায়। একপক্ষ মনে করছেন ৫২ বছর আগে যে উদ্দেশ্য নিয়ে নারী সংসদ সদস্য চালু করা হয়েছিলো এখন তার প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ৫২ বছর আগে নারীরা বিভিন্ন জায়গায় পিছিয়ে ছিলেন। এখন সংসদ কিংবা সরকার সবখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে নারীরা। এ অবস্থায় নারী আসন আর প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন কেউ কেউ।

 

আইন বিশ্লেষক শাহদীন মালিক বলেন, ‘৭২ এটা করা হয়েছিলো তখন এই প্রেক্ষাপট ছিলো ভিন্ন। এখন তো এটা মূল্যহীন হচ্ছে। কারণ এই সংসদে কোন সংসদীয় এলাকা নাই। জবাবদিহিতা নাই। জোরাতালি দিয়ে যে ৫০ জন করছি সেটা ৭২ এর প্রেক্ষাপটের সাথে মিলে না।

ড. তোফায়েল আহমেদ মনে করেন বর্তমান প্রেক্ষাপটে এসে নারী আসনের প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, এখন যোগ্যদের মনোনয়ন দেয়া হয় না। শুধুমাত্র কিছু সুযোগ সুবিধা আছে সেগুলো ভোগ করতে দেয়ার জন্য এমপি মনোনয়ন দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন না।

R/N

আমাদের তথ্যচিত্র গান কবিতা নাটক ভালো লাগলে ফেসবুকে শেয়ার করুন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ